
বিশেষ প্রতিনিধি: দিনাজপুর জিলা স্কুলের ১৯৬৮ সালের এসএসসি ব্যাচের ছাত্রদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিনাজপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুর জিলা স্কুল ১৯৬৮ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে সোনার বাংলার সকল শিক্ষার্থীরা যেমনি সোনার সন্তান হিসেবে গড়ে উঠবে, ঠিক তেমনি এই সোনার দেশে আর কেন দরিদ্রই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গত ৮ জুন ২০১৯ শনিবার দিনাজপুর জিলা স্কুলের ১৯৬৮ সালের এসএসসি ব্যাচের ছাত্ররা দিনাজপুর জিলা স্কুলের শিক্ষক মিলনায়তনে একত্রিত হয়ে ৫১ বছর পূর্বে জিলা স্কুলে অধ্যায়নকালীন অতীত স্মৃতি রোমন্থন করেন, সেই সাথে ২জন অতি দরিদ্র মহিলাকে আত্মনির্ভলশীল হওয়ার জন্য ২টি সিঙ্গার সেলাই মেশিন এবং ৫ জন অতি দরিদ্র কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীকে পড়া-লেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নগদ অর্থ প্রদান করে।
সংগঠনের সভাপতি এ.কে শফিকুর রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন দিনাজপুর জিলা স্কুলের ১৯৬৮ সালের এসএসসি ব্যাচের তৎকালিন ২ জন শিক্ষক বজির উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও মোঃ আবু জোবায়ের।
এবারের ঈদ পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানটিতে সংগঠনের সদস্যদের সন্তানরা উপস্হিত ছিল। অন্যান্যবারের চাইতে এবারের মিলনমেলাটি ছিল একটু ব্যতিক্রমধর্মী। বয়সের ভারে নুহ্যমান ১৯৬৮ ব্যাচের এসএসসি ব্যাচের ছাত্ররা এ সংগঠনের দায়িত্ব তাদের সন্তানদের উপর ন্যাস্ত করার জন্য এখন থেকেই গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের সন্তানদের উপস্থিত করে এ সংগঠনের গঠনমুলক কার্যক্রমের বর্ণনা করা হয় এবং সন্তানেরাও যেন আরো সুন্দর ও নতুন আঙ্গিকে সেবামুলক কার্যক্রমগুলো চালিয়ে নিয়ে যায় সে বিষয়ে বিষদভাবে আলোচনা করা হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন এডঃ এম এ মজিদের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ১৯৬৮ এসএসসি ব্যাচের মোঃ বজলুল হক, মোঃ আনোয়ারুল কাদির জুয়েল, মোঃ আশরাফুল আলম শফি, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, এ্যাডঃ কেরামত আলী এবং সন্তানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাইশা মাহরুখ এশা।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর জিলা স্কুলের ১৯৬৮ সালের এসএসসি ব্যাচ কল্যাণ ট্রাস্টের কার্যক্রম পূর্বে স্বল্পপরিসরে শুধু ঢকাতেই কয়েকজন বন্ধুদের মধ্যে সীমিত থাকলেও ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয় ২০১৭ সালের ২৯শে জুন থেকে। সংগঠনটি সরকারিভাবে একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও কল্যাণমুলক সংগঠন হিসেবে নিবন্ধিত হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। সংগঠনটি নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে সমাজের অবহেলিত ও অসহায়দের স্বাবলম্বীকরণে উল্লেখযোগ্য ও দৃষ্ঠান্তমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
এই সংগঠনটি আগামীতে এসব কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি করা ছাড়াও একটি বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠার কথা জানান। এ যাবত সরকারি ও বে-সরকারি কোন সাহায্য ছাড়াই দিনাজপুর জিলা স্কুলের ১৯৬৮ সালের ছাত্রদের ব্যাক্তিগত অর্থে সংগঠনটির সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সংগঠনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, সকল স্কুলের সকল এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও যেন এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের চাইতে আরো বেশি সেবামূলক কার্যক্রম করে দিনাজপুর জেলা তথা দেশের অসহায়দের আত্মনির্ভরশীল হতে অনন্য ভূমিকা রাখতে অনুপ্রানিত হয়।
দিনাজপুর জিলা স্কুল ১৯৬৮ এসএসসি ব্যাচের এ ধরণের অসহায়দের সেবা ও স্বাবলম্বীকরণের কার্যক্রমের সুনাম ও দৃষ্টান্ত শুধু দিনাজপুরেই নয়, দেশ ও বিদেশেও এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
