Daily Gazipur Online

পাঁচবিবিতে ভিক্ষা করে ওমরা হজ্বের টাকা যোগার করছেন আশেদা বিবি

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে প্রায় ৭০ বছর বয়সী এক মহিয়সী নারী ভিক্ষা করে উমরা হজ্বে যাওয়ার জন্য টাকা যোগার করছেন। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র তিন মাথার দেওয়ান মোবাইল প্লাস থেকে আশেদা বিবি প্রতি সপ্তাহে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতো। এতে দেওয়ান মোবাইল প্লাসের স্বত্তাধীকারী রাসেল দেওয়ানের সন্দে হলে আশেদা বিবিকে জিজ্ঞাসা করলে বেড়িয়ে আসে ওমরা হজ্জের যাওয়ার খবর।
আশেদা বিবির পৈত্রিক বাড়ী জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় এবং স্বামীর বাড়ী কালাই উপজেলা। চার মেয়ে ও দুই ছেলের জননী আশেদা বিবি। মেয়েরা শশুর বাড়িতে সংসার করছে। দুই ছেলের একজন ঢাকায় রিক্সা চালায়। একজন বাড়িতে কৃষিকাজ করেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর এক বোনের সঙ্গে আশেদা বিবি জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে চলে আসে। তখন থেকে পাঁচবিবি পৌর এলাকার নারায়নপুর গ্রামের নুরুল হকের বাড়িতে আশ্রিতা থাকে। সারাদিন এ বাড়ি ও বাড়ি চেয়ে-চিন্তে রাতে আশ্রয় দাতা নুরুল হকের বাড়িতে ফিরে আসে।
আশেদা বিবি বলেন,তিনি মানুষের নিকট হজ্বে যাবার কথা বলে টাকা আবদার করেন। এভাবে সপ্তাহ জুড়ে প্রায় ৬/৭ শ টাকা আদায় হয়। সেটুকু থেকে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় মেয়ের নিকট প্রতি সপ্তাহে ৫শ টাকা পাঠিয়ে দেয় জমানোর জন্য। বাকি টাকা রাখেন নিজের খাওয়া ও ঔষধের জন্য ।
সে জানায়, এ পর্যন্ত তিনি ৪০ হাজার টাকার মত জমিয়েছে। ওমরা হজ্ব করতে প্রায় ৯০ হাজার টাকা লাগে জেনে বাকি টাকার জন্য এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স ক্ষেতলাল শাখায় একটি হজ্ব বীমা চালু করেন । সেখানে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা পরিমানে ৬ মাসে ১২হাজার টাকা জমা করার পর জানতে পারে এটি দশ বছর মেয়াদী। এতো দীর্ঘ সময় তিনি অপেক্ষা করতে পারবেন না জন্য সেটি বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে এখনো তিনি সেই জমাকৃত ১২০০০ টাকা ফেরত পাননি বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।
আশেদা বিবির আশ্রিতা পৌর এলাকার নারায়নপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী নুরুল হকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তার এই ইচ্ছার কথা।
নুরুল বলেন,আশেদা বিবি তার বাড়িতে ১৮ বছর থেকে বসবাস করছেন। আমরা তার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছি এবং তার মেয়েরাও আমাদের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেছে। তিনি আমাদের বাড়ির সদস্যের মত হয়ে গেছে। আমার স্ত্রীর নিকট শুনেছি তিনি ওমরা হজ্বে যাওয়ার জন্য মেয়ের নিকট টাকা জমাচ্ছেন।
আশেদা বিবি বলেন,অনেক আগে থেকেই আমার ক্বাবা শরীফ তাওয়াফ করা ও রাসুল (সাঃ) এর রওজা মোবারকের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। আমার আশ্রিতার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রীর হজ্ব করে আসা দেখে আমার মনের ইচ্ছাটা আরো বেড়ে যায়। সেই ইচ্ছা থেকেই আমার এই চেষ্টা।