Daily Gazipur Online

যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি —— ডিজি র‌্যাব

এস,এম,মনির হোসেন জীবন : এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। আমাদের নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স ও অন্যান্য ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্র্রহণ করেছি। যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।
তিনি রোববার (২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ঈদ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
ডিজি র‌্যাব বেনজীর আহমেদ বলেন, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫১২ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাব। তবে, আদালত থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০ জঙ্গি জামিনে বের হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই জঙ্গি এখনও পর্যন্ত পলাতক আছে।
তিনি আরও বলেন, অপতৎপরতা বা যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে। সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে ঈদ উৎসবটি নিরাপদ করার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ উপস্থিতি প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঈদে ফাঁকা শহরগুলোতে যে কোনো অপরাধ রুখতে আমাদের আলাদা পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
জঙ্গি আসামিদের পক্ষে আইনজীবিদের আইনি লড়াই না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণসহ ৮-১০টির অপরাধের সঙ্গে জঙ্গি আসামিকে এক করলে হবে না। তাদের ক্ষেত্রে আইনি লড়াই না লড়তে আইনজীবীদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন।
জঙ্গিদের কাছ থেকে আইনজীবি সহ কেউ মুক্ত নয় উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, যারা জঙ্গিদের জামিনের জন্য লড়ছেন, তারা কিন্তু হামলার শিকার হতে পারেন। টাকা পেয়েই জঙ্গি আসামির জামিনের জন্য লড়া ঠিক নয়। জঙ্গিরা আইনজীবীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল।দেখলে তা হবে আত্মঘাতী। জঙ্গিরা আদালতেও হামলা করেছে, কেউ তাদের আওতার বাইরে নয়। জঙ্গিবাদকে অন্যান্য অপরাধের মতো আইনি সহায়তা দিলে তা হবে আত্মঘাতী বলে জানান তিনি।
ঈদকালীন নিরাপত্তার বিষয়ে এলিট ফোর্স র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, রমজানের শুরু থেকেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো ঘিরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরতে এবং বাড়ি থেকে ঢাকায় ফিরতে র‌্যাব তৎপর রয়েছে।
দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, জামিনে পলাতক থাকা জঙ্গিরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা বেশিদিন এ তৎপরতা চালাতে পারবে না।
আইনের ফাঁক দিয়ে জঙ্গিরা বের হয়ে যাচ্ছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনের কোন সমস্যা নেই, আইন প্রয়োগে সমস্যা থাকতে পারে।
ডিজি র‌্যাব বলেন, ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস-ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে যানজট এবং দূর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে দেশজুড়ে ৪২টি স্থানে র‌্যাবের নজরদারি রয়েছে। তবে, এবার সড়ক এবং নৌপথে ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে, রেলপথে কিছুটা বিলম্বিত রয়েছে।
২৪ ঘণ্টা সড়ক-নৌ এবং রেলপথে নজরদারি রয়েছে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ঈদে বাড়িতে যাত্রা এখনও স্বস্তিদায়ক রয়েছে, আশা করছি ফেরার যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হবে। আমরা চাই না, সড়কে কোনো প্রাণহানি ঘটুক।
জাতীয় ঈদগাহসহ রাজধানীতে পাঁচশতাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তারা বলেন, রাজধানী ছাড়াও শোলাকিয়া, দিনাজপুরসহ সবকটি বড় ঈদ জামাতে নিরাপত্তা কাভার করা হবে। অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ঈদ উদযাপন নিরাপদ করতে পূর্ণ প্রস্তুতির কথা জানান ডিজি র‌্যাব।
ঈদ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এলিট ফোর্স র‌্যাবের আইনও গনমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার মূফতি মাহমুদ খান, র‌্যাবের উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মেজর হুসাইন রইসুল আযম মণি, র‌্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্ট্যান্ড কর্ণেল সারোয়ার বিন কাশেম সহ র‌্যাবের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।