বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশই বর্তমানে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত

0
88
728×90 Banner

 

ডেইলি গাজীপুর ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশই বর্তমানে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আজ ৫ আগস্ট ২০২১ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর জেনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্ট-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এই তথ্য জানান। তিনি জানান, কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশে জানুয়ারি ২০২১ এ ইউকে বা আলফা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণের হার বেশি ছিল। পরবর্তীতে মার্চ ২০২১ এর রিপোর্ট অনুযায়ী সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণের হার বেশি ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গত একমাসের ৩০০ স্যাম্পল এর জেনোম সিকোয়েন্সিং এ দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ, যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় প্রথম ১৫ দিনে এই সংখ্যা ছিল ৩ শতাংশ। একজন রোগীর ক্ষেত্রে মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণায় এগিয়ে নিতে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের কারণে বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনা মোকাবিলা সহজতর হয়েছে। আজকের এই গবেষণার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অতিসংক্রমণজনিত ভাইরাস। বাঁচতে হলে গণটিকাদান কার্যক্রম ও গণমাস্ক ব্যবহারের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাননীয় উপাচার্য জানান, চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত সারা দেশব্যাপী রোগীদের উপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। এই গবেষণায় দেশের সকল বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়। গবেষণায় মোট ৩০০ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ। বিএসএমএমইউ-এর গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩০-৩৯ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। যেহেতু কোনো বয়সসীমাকেই কোভিড-১৯ এর জন্য ইমিউন করেছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ ঝুঁকি নেই বলা যাচ্ছে না। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন- ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি পেয়েছিলাম। পাশাপাশি ষাটোর্ধ বয়সের রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
মাননীয় উপাচার্য বলেন, মোট ৩ হাজার রোগীর স্যাম্পল সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ করে বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরি করা সম্ভব হবে। করোনা অনেক ক্ষেত্রে বহমান জীবন-যাপনের বাধা তৈরি করলেও জীবন থেমে নেই। অন্যান্য জেনেটিক্স রোগসমূহের উপর গবেষণা কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব ডাটা তৈরির উদ্যেগ গ্রহণ করা হবে। কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য কোভিড-১৯ এর জেনোমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশন এর ধরণ এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জেনোমের সাথে এর আন্তঃসর্ম্পক বের করা এবং বাংলাদেশী কোভিড-১৯ জেনোম ডাটাবেস তৈরি করা। আজকের এই রিপোর্ট বিএসএমএমইউ-এর চলমান গবেষণার প্রথম মাসের ফলাফল, আশা করি, পরবর্তী মাসগুলোতে চলমান হালনাগাদকৃত ফলাফল জানানো সম্ভব হবে। মাননীয় উপাচার্য আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং, টিকা গ্রহীতাদের এন্টিবডিসহ করোনা ভাইরাস সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
চলমান এই গবেষণার প্রধান গবেষকের দায়িত্বে রয়েছেন এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু, সহযোগী গবেষকের দায়িত্বে রয়েছেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন ও ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, শিশু অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
728×90 Banner

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here