ডেইলি গাজীপুর প্রতিবেদক : গাজীপুরে অপহরণের ১৮ দিনেও মা ও শিশু উদ্ধার হয়নি। নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার প্রধানও অন্যত্র আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত ৯ ফেব্রু য়ারি নগরীর পূবাইল থানার কামারগাঁও এলাকার নাজমুল হকের স্ত্রী জাকিয়া আক্তার রুমা (৩২) স্থানীয় মুক্তধারা বিদ্যানিকেতন থেকে ছয় বছরের শিশু সন্তান নাঈমুল হককে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে সন্তানসহ অপহরণের শিকার হন। ঘটনার পর পূবাইল থানা পুলিশ নগরীর কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকা থেকে রুমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রুমার স্বামী নাজমুল হক বাদী হয়ে সহোদর আজমুল হক ও আজমুলের স্ত্রী তানিয়া হকসহ অজ্ঞাতনামের বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রæয়ারি পূবাইল থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আজমুল (৪৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া (৩৫) এবং তানিয়ার সাথে মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে পাবনা জেলার বেড়া থানার জয়নগর গ্রাম থেকে হাকিম আলীকে (৩০) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা অপহরণের দায় স্বীকার না করায় পুলিশও ঘটনার কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না।
নাজমুল হক জানান, তিনি পরিবার নিয়ে পূবাইল কামারগাঁওয়ের পৈত্রিক বাড়িতে বসবাস করেন। একই বাড়িতে বড় ভাই আজমুল হকও পরিবার নিয়ে বাস করেন। বড় ভাই আজমুলের স্ত্রী তানিয়া মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত। বিভিন্ন অপরিচিত লোকজন ওই বাড়িতে তানিয়ার কাছে আসা-যাওয়া করেন। নাজমুল ও তার স্ত্রী রুমা এসব বিষয় মেনে নিতে পারতেন না। তাই তাদেরকে ওই বাড়ি থেকে বিতাড়নের জন্য মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করতেন তানিয়া। বড় ভাই আজমুল হকও তানিয়াকে আস্কারা দিতেন। ফলে স্ত্রী-সন্তানকে তারাই অপহরণ করেছে বলে নাজমুলের ধারণা। এ ঘটনার পর নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগ করে নাজমুল বলেন, ‘আমার নিজেরও এখন কোনো নিরাপত্তা নাই। তাই টঙ্গীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি। স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া-ঘুম ছেড়ে দিয়েছি।’
এব্যাপারে পূবাইল থানার ওসি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভিকটিম উদ্ধারের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে এজাহারনামীয় ২ জন ও সন্ধিগ্ন ১ জন আসামীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক দ্ব›দ্ধ ছিল। তাই ঘটনাটি পরিকল্পিত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরদিকে কোনাবাড়ি এলাকায় একজন দিনমজুরের কাছ থেকে রুমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই দিনমজুর রাস্তার পাশে মোবাইল ফোনটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পেয়ে কুড়িয়ে নেন।